ম্যালেরিয়া জ্বর এর লক্ষণ এবং প্রতিকার

সংক্ষিপ্ত বিবরণ

ম্যালেরিয়া জ্বর হল একটি মশা দ্বারা প্রেরিত রোগ যা প্লাসমোডিয়াম প্যারাসাইটের কারণে হয় এবং এটি এনোফেলিস মশা দ্বারা পরিবাহিত হয়। ম্যলেরিয়া শব্দটি সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন টর্টি ১৭৫১ সালে। ইতালিয় শব্দ Mal (অর্থ— দূষিত) ও aria (অর্থ- বায়ু) হতে Malaria (ম্যালেরিয়া) শব্দটি এসেছে।

ম্যালেরিয়া জ্বর
ম্যালেরিয়া জ্বর

কীভাবে ছড়ায় ম্যালেরিয়া

দুই প্রজাতির মশার মধ্যে স্ত্রী এনোফিলিস মশার কামড়ে দেহে প্রবেশ করে স্যালাইভা। তারপর প্রোটিস্ট নামক অনুজীবের মাধ্যমে রক্তে ছড়িয়ে পড়ে পরজীবি।

এর ফলে দেখা দেয় ম্যালেরিয়া।সাধারণত ফলমূলের রস মশার খাবার হলেও গর্ভকালে পুষ্টির জন্য দরকার হয় রক্তের। এক্ষেত্রে এনোফিলিসের প্রথম পছন্দ মানবদেহ। মশার কামড়ে এই রোগটি হয় এবং জ্বর এ রোগের প্রধান লক্ষণ।  তাই ম্যালেরিয়া জ্বর নামেই প্রচলিত রোগটি।

লক্ষণ অথবা উপসর্গ

নির্দিষ্ট সময় পরপর কাঁপুনি দিয়ে জ্বর মাথাব্যথা হাতে-পায়ে তীব্র ব্যথা খাবারের প্রতি আগ্রহ কমে যাওয়া বা ক্ষুধামন্দা কোষ্ঠকাঠিন্য বমিবমি ভাব অথবা বমি অত্যধিক ঘাম হওয়া খিঁচুনি ক্লান্তি বা অবসাদ অনুভব করা

মাংসপেশি তলপেটে ব্যথা অনুভব প্লীহা ও যকৃত বড় হয়ে যাওয়ার সমস্যা দেখা দেয় অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা দেখা দেয় জটিলতম ধরন হলো ম্যালিগন্যান্ট ম্যালেরিয়া :

  • রক্তশূন্যতা
  • কিডনি বৈকল্য
  • শ্বাসকষ্ট হওয়া
  • জন্ডিস
  • খিঁচুনি
  • রক্তে গ্লুকোজ কমে যাওয়ার লক্ষণ প্রকাশ পায়

ম্যালেরিয়া জ্বর এর পরীক্ষা

ম্যালেরিয়া সাধারণত ব্লাড ফিল্মস ব্যবহার করে রক্তের দূরবীক্ষণ পরীক্ষা অথবা অ্যান্টিজেন ভিত্তিক দ্রুত ডায়গনস্টিক পরীক্ষার মাধ্যমে নির্ণয় করা হয়।

আধুনিক প্রযুক্তিতে প্যারাসাইটের ডিএনএ শনাক্ত করার জন্য পলিমারেজ শৃঙ্খল বিক্রিয়ার ব্যবহার উন্নত করা হয়েছে। হোম স্যাম্পল কালেকশন সার্ভিস পেতে ভিজিট করুন

ম্যালেরিয়া জ্বর উপসর্গ দেখা দিলে কি করতে হবে

রোগের উপসর্গ দেখা দিলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। সংক্রমণের তীব্রতা আর ম্যালেরিয়ার ধরনের ওপর এই রোগের চিকিৎসা নির্ভর করে।

সাধারণত তীব্রতা কম হলে ম্যালেরিয়া প্রতিকারের জন্য মুখে খাওয়ার ওষুধ দেওয়া হয়। কিন্তু সেরিব্রাল ম্যালেরিয়ার ক্ষেত্রে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করে ইনজেকশনের মাধ্যমে চিকিৎসা প্রদান করতে হয়।

ম্যালেরিয়া জ্বর এর প্রতিরোধ ও সুরক্ষা

ম্যালেরিয়াপ্রবণ এলাকায় ভ্রমণের ক্ষেত্রে অধিক সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। মশার কামড় থেকে বাঁচতে মশারি, অ্যারোসল স্প্রে, মশার কয়েল, প্রতিরোধক ক্রিম ইত্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে।

এ ছাড়া লম্বা হাতার জামাকাপড় পরা, সন্ধ্যার পূর্বে ঘরের জানালা বন্ধ রাখা, দরজা-জানালায় নেট ব্যবহার করা, বাড়ির আশপাশের ঝোপঝাড় এবং জলাবদ্ধ জায়গা নিয়মিত পরিষ্কার রাখা, কোথাও যেন পানি জমে মশার বংশবিস্তার ঘটতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

এ রোগ প্রতিরোধের জন্য কার্যকর টিকা এখনো বিশ্বব্যাপী বহুল প্রচলিত নয়। কাজেই অন্যান্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণই এ রোগ প্রতিরোধের একমাত্র উপায়। উপযুক্ত চিকিৎসার মাধ্যমে ম্যালেরিয়া থেকে আরোগ্য লাভ করা সম্ভব।

ম্যালেরিয়া রোগে অধিকাংশ মৃত্যুর কারণ হলো সময়মতো রোগ শনাক্ত না হওয়া এবং চিকিৎসায় বিলম্ব। সে জন্য জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। রোগের লক্ষণ দেখা দিলে, জটিলতা সৃষ্টির আগেই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। হেলথ নিয়ে আমাদের আরো আর্টিকেল পড়তে ক্লিক করুন। এই লেখাটি আমাদের কাছে পাঠিয়েছেন

ডাঃ আনিসুজ্জাম, ধন্যবাদ আপনাকে।

Leave a reply:

Your email address will not be published.

Site Footer